বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

ঈদের দিন কী করবেন, কী করবেন না

ধর্ম ডেস্ক:

আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমায় মুসলমানদের বড় উৎসব হলেও গতবছর থেকেই মহামারি এসে অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে ঈদ আনন্দ।

কোরবানির ঈদে আনন্দের বড় এক অনুষঙ্গ হলো পশুর হাট। পরিবারের বড়দের সঙ্গে বুক ফুলিয়ে হাটে হেঁটে বেড়াতো দস্যির দল। এ হাট ও হাট ঘুরে পছন্দের পশু কিনে বাড়ির আঙিনায় নিয়ে আসা হতো হেঁটে হেঁটে। বাড়িজুড়ে উৎসবের আমেজ লেগে যেত কয়েক দিন আগেই। পশুকে খাওয়ানো, গোসল করানো থেকে শুরু করে সবার আনন্দের কেন্দ্রে থাকতো কোরবানির পশু।

আবার ঈদের দিন সে পশু কোরবানি দিয়ে দরিদ্র ও সামর্থ না থাকা আত্মীয়দের মাঝে মাংস বিলি করার উৎসবও চলতো ঘটা করে। কিন্তু করোনাকাল কেড়ে নিল এ আনন্দের অনেকটুকু। শিশুদের এখন বাইরে যাওয়া বারণ। বড়রাও অনেকে আছেন ভয়ে। বিশেষ করে সচেতন অনেকেই তো হাট এড়িয়ে পশু কিনছেন অনলাইনে।

সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ও মৃত্যুর মিছিলের এ দুঃসময়ে জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, এখন পশুর হাটে যাওয়া, কোরবানি ও মাংস বিতরণের সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। বন্ধু-আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও টানতে হবে লাগাম। নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে, নিরাপদ রাখতে হবে স্বজনদেরও।

‘বেঁচে থাকলে আরও ঈদ পাওয়া যাবে। কিন্তু ঈদের আনন্দে দিশেহারা হলে পরের ঈদের জন্য হয়তো পরিবারের কাউকে আর কাছে পাবেন না।’ এমনটা বললেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন।

তিনি বলেন, ‘১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন তো এখন সম্ভব হচ্ছে না। তবে যারা অন্য জায়গা থেকে স্থানান্তরিত হচ্ছেন (গ্রাম থেকে ঢাকায়, ঢাকা থেকে গ্রামে) তাদের অনুরোধ করবো তারা যেন ঘরের ভেতর থাকেন।’

মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘ঈদের জামাতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২০ জন থাকবেন। যারা জামাতে যাবেন তারা অবশ্যই মাস্ক পরে যাবেন, খোলা জায়গায় দাঁড়াবেন এবং কমপক্ষে দুই হাত দূরত্ব বজায় রাখবেন।’

‘ঈদের সময় বন্ধু-স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। বেড়াতে যাওয়া ও দাওয়াত বাদ দিতে হবে। ভিড় যত এড়িয়ে চলবেন, তত নিরাপদ থাকবেন।’

করোনার এই সময় ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ছে মনে করিয়ে তিনি বলেন, ‘কোথাও যেন পানি জমে না থাকে, পশুর বর্জ্যও যেন জমে না যায় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।’

জনস্বাস্থ্যবিদ লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘পুরো বিশ্ব এখন মহামারির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ যুদ্ধে আমাদের প্রধান ঢাল হচ্ছে মাস্ক। ঈদের নামাজে যেতে হবে মাস্ক পরে, নামাজে দাঁড়ানোর সময় দূরত্ব তিন হাত রাখাই নিরাপদ। চার হাত হলে আরও ভালো।’

নামাজ শেষে আগের মতো কোলাকুলি করা থেকেও বিরত থাকতে হবে বলে জানান ডা. লেলিন চৌধুরী।

তিনি আরও জানান, ‘পশু জবাইয়ের সময় যারা ধরাধরি করেন, তাদের মুখ খুব কাছাকাছি চলে আসে। তাদের সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।’

‘আবার দরিদ্রদের মাংস বিতরণের সময় কোনোভাবেই ভিড় করা যাবে না। অনেকেই ভিড় বাড়িয়ে আনন্দ পেতে চান। তাদেরও সবিনয় অনুরোধ করছি-এবার কাজটি করবেন না। ক্ষণিকের আনন্দটা বিষাদে রূপ নিতে মোটেও সময় নেবে না।’

‘কারও যদি ঠান্ডা-কাশি বা জ্বরের লক্ষণ থাকে, তবে তার ঈদগাহ কিংবা কোরবানির স্থানে যাওয়া যাবে না। ঘরে নিজেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে। কোরবানির ঈদ মানে তো ত্যাগের ঈদ। নিজের, পরিবারের ও আশেপাশের সবার ভালোর জন্য এবার এই ত্যাগটুকুও করুন।’ বললেন ডা. লেলিন চৌধুরী।

বিশেষজ্ঞরা আরও জানালেন, যেখানে কোরবানি দেওয়া হবে সে জায়গা অবশ্যই দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন কোথাও পানি জমে না থাকে। পানি জমলেই ডিম পাড়বে এডিস মশা।

তারা আরও বলেন, ইতোমধ্যেই দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে শ্রাবণের বৃষ্টি। বাড়ির চারপাশ, ছাদ, বারান্দা, ফুলের টবে পানি যেন না জমে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: বাংলাট্রিবিউন।

ভয়েস/ জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION